ঢাকা শহরে বসবাসরত ব্যাচেলর সাংবাদিকদের বাস্তব জীবন ও আবাসনসংকটকে ঘিরে নির্মিত হয়েছে ক্যাপিটাল ড্রামার নাটক ‘দেরি করে আসবেন’। মুরসালিন শুভের গল্প ও পরিচালনায় নির্মিত এই নাটকটি কেবল বিনোদনের মাধ্যম নয়, বরং এটি একটি সংবেদনশীল সামাজিক বার্তা বহন করে। বাসা ভাড়া দেওয়া কিংবা নিয়ম তৈরির ক্ষেত্রে বাড়িওয়ালাদের কিছুটা সহানুভূতিশীল হওয়া উচিত।
নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্র সাংবাদিক অভিক। যার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন জনপ্রিয় অভিনেতা জিয়াউল ফারুক অপূর্ব। প্রতিদিন অফিস শেষে গভীর রাতে বাসায় ফিরতে হয় তাকে। কিন্তু বাড়িওয়ালার কঠোর নিয়ম অনুযায়ী রাত ১১টার পর গেট বন্ধ থাকে, চাবিও দেওয়া হয় না। প্রথমদিকে বাড়িওয়ালা নিজে এসে গেট খুলে দিলেও একদিন তিনি আর আসেন না। সেদিনই অভিকের দেখা হয় বাড়িওয়ালার মেয়ে কাননের (অভিনয়ে সাদিয়া আয়মান) সঙ্গে। এখান থেকেই আবেগ, সহানুভূতি ও সম্পর্কের এক নতুন বাঁকে মোড় নেয় নাটকের গল্প।
একদিকে অভিকের পেশাগত বাস্তবতা, অন্যদিকে কাননের নিঃশব্দ সহানুভূতি। এই দুটি ভিন্ন জীবন অভিজ্ঞতা মিলে নাটকে তৈরি হয়েছে এক মানবিক সম্পর্কের সূচনা। অভিক যখন জানায়, ‘গেট বন্ধ’ নীতির কারণে এক তরুণী রাস্তায় ধর্ষণের শিকার হয়েছিল, তখন কাননের চোখে অনুশোচনার যে প্রকাশ ফুটে ওঠে, তা নাটকটিকে গভীরতা দেয়।
নাটকে সাদিয়া আয়মানের সংযত ও পরিপক্ব অভিনয়, অপূর্বর আবেগময় প্রকাশভঙ্গি, এবং শিল্পী সরকার অপু ও সমু চৌধুরীর সাবলীল উপস্থিতি পুরো নাটকটিকে বাস্তব ও বিশ্বাসযোগ্য করে তুলেছে।
পরিচালক মুরসালিন শুভ নাটকটিতে সফলভাবে মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন বাস্তবতা, আবেগ ও সামাজিক সচেতনতার। ‘দেরি করে আসবেন’ শুধু একটি প্রেমের সূচনা নয়, এটি সমাজের এক দীর্ঘদিনের সমস্যা। ব্যাচেলরদের প্রতি বাড়িওয়ালাদের অবহেলা ও কঠোর আচরণ এর ওপর একটি সংবেদনশীল প্রতিবেদনও বটে।
এই নাটক সেইসব মানুষদের অন্তরের কথা বলে, যারা শহরে ব্যাচেলর জীবনের কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হয়েছেন। এটি একাধারে ভাবনার খোরাক, আবেগের স্পর্শ এবং সম্পর্কের সূক্ষ্মতা নিয়ে নির্মিত এক মানবিক গল্প। নাটকটি সমাজের প্রতি একটি নরম অথচ শক্ত বার্তা। সহানুভূতির প্রয়োজনীয়তা আজও হারিয়ে যায়নি।