রাজধানীর দিয়াবাড়ি এলাকায় অবস্থিত মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বিমানটির পাইলটসহ এখন পর্যন্ত ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে। যদিও সরকারিভাবে সর্বশেষ (বুধবার দুপুর ১টা পর্যন্ত) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, মৃত্যু হয়েছে ২৯ জনের; আহত ও চিকিৎসাধীন ৬৯ জন। আহতদের রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
বিধ্বস্তের পরপরই ঘটনাস্থলে নেমে আসে শোকের ছায়া। গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়ে মৃত্যুর খবর ও আতঙ্ক। মর্মান্তিক এই ঘটনায় সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে রাজনীতিবিদ, সাংস্কৃতিক অঙ্গনের ব্যক্তিরাও শোক প্রকাশ করেছেন এবং দুর্ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও প্রকৃত হতাহতের সংখ্যা প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে, ঘটনার প্রকৃত তথ্য নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। একাধিক বেসরকারি সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে দাবি উঠেছে, সরকার প্রকৃত লাশের সংখ্যা গোপন করছে। এই অভিযোগ ঘিরেই রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভে নামে শিক্ষার্থীরা, কোথাও কোথাও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে।
সোশ্যাল মিডিয়াতেও শুরু হয় জল্পনা-কল্পনা, শোক আর ক্ষোভের প্রকাশ। প্ল্যাটফর্মগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে বিধ্বস্ত যুদ্ধবিমান, পোড়া দেহ ও ধ্বংসস্তূপের বীভৎস ছবি ও ভিডিও। এ অবস্থায় অনেকে অভিযোগ তুলেছেন, ইউটিউবার, টিকটকার ও কিছু সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীর অতিউৎসাহী কনটেন্ট তৈরির প্রবণতার কারণে হাসপাতালগুলোর স্বাভাবিক চিকিৎসা কার্যক্রম পর্যন্ত ব্যাহত হচ্ছে। এতে উদ্বেগ জানিয়েছেন অনেক সাধারণ নাগরিক।
এমন পরিস্থিতিতে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন চিত্রনায়ক ওমর সানী। গতকাল দেওয়া পোস্টে তিনি লেখেন, লাশ মানেই রাজনীতি এবং কনটেন্ট। বাদ দেন না ভাই। মাটির দিকে তাকান, আপনাকে আমাকে শুধু ডাকে।
তার এই স্ট্যাটাস সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচিত হয়। অনেক অনুসারী তার সঙ্গে একমত পোষণ করেন। কেউ মন্তব্য করেন, খুব সুন্দর গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন প্রিয়।
আরেকজন লেখেন, যে রাজনীতি আত্মীয়তা, বন্ধুত্ব নষ্ট করে, সে রাজনীতি থেকে দূরে থাকাই ভালো। একশ্রেণির মানুষ তো আছেই ভিউ ব্যবসায়ী। কেউ আবার হতাশার সঙ্গে বলেন, ‘এমন একটা দেশে আমরা বস করি যেখানে সবকিছুতেই রাজনীতি।’
বর্তমানে মাইলস্টোন দুর্ঘটনার তদন্ত কাজ চললেও নিহতদের প্রকৃত সংখ্যা এবং দুর্ঘটনার আসল কারণ নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন রয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো এখনও শোক আর অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।