সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র ভোলাগঞ্জের সাদা পাথরে প্রকাশ্যে চলছে পাথর লুটপাট। স্থানীয়দের অভিযোগ, নেতৃত্বে রয়েছেন বিএনপি ও যুবদল নেতারা; যদিও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের সম্পৃক্ততার অভিযোগও আছে।
গত বছরের ৫ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া এই লুটপাট গত দুই সপ্তাহে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। হাজার হাজার শ্রমিক কোদাল, বেলচা, শাবল ও টুকরি নিয়ে পাথর উত্তোলন করে নৌকায় করে মিলমালিকদের কাছে সরবরাহ করছেন। পরে মেশিনে ভেঙে এসব পাথর দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লুটপাটের ভিডিওও ভাইরাল হয়েছে।
চাঁদাবাজির কৌশল বদল
আগে নৌকাপ্রতি চাঁদা নেওয়া হলেও এখন নির্দিষ্ট সিন্ডিকেটের কাছে কম দামে (সর্বোচ্চ ১৫০০ টাকা) বিক্রি করার শর্তে সবাইকে পাথর তুলতে দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয়দের ধারণা, গত এক বছরে সিলেটের কোয়ারিভুক্ত এলাকা ছাড়া অন্তত ২-৩ হাজার কোটি টাকার পাথর লুট হয়েছে।
পরিবেশের ঝুঁকি ও রাজস্ব ক্ষতি
পরিবেশবিদরা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে সাদা পাথর পর্যটনকেন্দ্র বিলীন হয়ে যাবে এবং সরকার বড় অঙ্কের রাজস্ব হারাবে। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম কিমের মতে, বিগত দেড় দশকে যা লুট হয়েছে, গত এক বছরে তা কয়েকগুণ বেড়েছে।
অভিযোগ অস্বীকার ও তদন্ত
সিলেট জেলা যুবদলের সহসাধারণ সম্পাদক বাহার আহমদ রুহেল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী জানিয়েছেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে, দোষীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রশাসনের অসহায়ত্ব
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি জানান, ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে টাস্কফোর্স অভিযান হয়, তবে পুলিশের একার পক্ষে ঠেকানো সম্ভব নয়। জেলা প্রশাসকও জনবল সংকটের কথা স্বীকার করেছেন।
পরিবেশকর্মীর আক্ষেপ
আব্দুল করিম কিম বলেন, “প্রকৃতির ধ্বংসলীলা দেখতে চাইলে সাদা পাথরে আসতে পারেন।”