আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে গণভোট একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দেন।
এর আগে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনুমোদন পায় ‘জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫’। পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন আদেশে স্বাক্ষর করেন।
এই গণভোটে চারটি গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক প্রশ্ন একত্র করে একটি মাত্র প্রশ্ন হিসেবে ব্যালটে তোলা হবে। ভোটাররা ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ দিয়ে মতামত জানাবেন। ‘হ্যাঁ’ বিজয়ী হলে দেশের সংসদ কাঠামো বড় পরিবর্তনের মুখে পড়বে-সংসদ হবে দুই কক্ষবিশিষ্ট, আর দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে (PR পদ্ধতি) ১০০ সদস্যের একটি নতুন উচ্চকক্ষ গঠিত হবে।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) বেলা ১১টায় প্রধান উপদেষ্টার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে গণভোটের সম্ভাব্য প্রশ্নটি প্রকাশ করা হয়। সেখানে ভোটারদের সম্মতি চাওয়া হয়েছে জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ এবং সনদে প্রস্তাবিত সাংবিধানিক সংস্কারগুলোর প্রতি।
ব্যালটে অন্তর্ভুক্ত চারটি মূল প্রস্তাব হলোঃ
ক. নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশনসহ সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান জুলাই সনদের নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুযায়ী পুনর্গঠিত হবে।
খ. আগামী সংসদ হবে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট। দলগুলোর মোট ভোটের অনুপাতে ১০০ সদস্যের উচ্চকক্ষ গঠিত হবে এবং সংবিধান সংশোধনের জন্য এ কক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ অনুমোদন বাধ্যতামূলক থাকবে।
গ. নারী প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধি, বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার নির্বাচন, সংসদীয় কমিটির নেতৃত্বে ভারসাম্য, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নির্ধারণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি, মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও স্থানীয় সরকার শক্তিশালীকরণসহ মোট ৩০টি সংস্কারে রাজনৈতিক দলগুলোর যে ঐকমত্য হয়েছে—আগামী নির্বাচনে বিজয়ী দলগুলো এসব বাস্তবায়নে বাধ্য থাকবে।
ঘ. জুলাই সনদের অন্যান্য সংস্কার রাজনৈতিক দলগুলোর ঘোষিত প্রতিশ্রুতির আলোকে বাস্তবায়িত হবে।