আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস উপলক্ষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বাংলাদেশের প্রতিটি কন্যাশিশুর স্বপ্ন, শিক্ষা এবং মর্যাদাপূর্ণ জীবনের অধিকারকে সামনে রেখে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিবৃতি দিয়েছেন। তিনি বলেন, একজন কন্যাসন্তানের পিতা হিসেবে আমি জানি, মেয়েদের ক্ষমতায়ন কেবল একটি নীতি বিষয় নয়, বরং এটি ব্যক্তিগত দায়বদ্ধতা। আমরা এমন এক বাংলাদেশ চাই, যেখানে প্রতিটি মেয়ে স্বাধীনতা, সম-অধিকার, সুযোগ ও নিরাপত্তা পাবে-যা প্রত্যেক পিতা-মাতা তাদের সন্তানের জন্য কামনা করে।
তারেক রহমান তার বিবৃতিতে আরো বলেন, বিএনপি সরকার নারীর জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছে, এবং সুযোগ পেলে আবারও সেই উন্নয়ন যাত্রা অব্যাহত রাখবে। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে গার্মেন্টস শিল্প কেবল একটি অর্থনৈতিক খাত হিসেবে নয়, বরং লাখো নারীর জীবনে আশার প্রদীপ হয়ে উঠেছিল। তার সময়েই নারীর উন্নয়নকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।
এছাড়া, তারেক রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সময়েই মেয়েদের শিক্ষা অধিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত মেয়েদের জন্য বিনামূল্যে শিক্ষা চালু হয় এবং 'ফুড ফর এডুকেশন' ও 'ক্যাশ ফর এডুকেশন' কর্মসূচির মাধ্যমে লাখো মেয়ে বিদ্যালয়ে ফিরে আসে।
তিনি আরো উল্লেখ করেন, খালেদা জিয়ার ‘ফিমেল সেকেন্ডারি স্কুল অ্যাসিস্ট্যান্স প্রজেক্ট’ বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষায় লিঙ্গসমতা প্রতিষ্ঠা করে এবং বাল্যবিবাহের হার কমিয়ে মেয়েশিক্ষার একটি বৈশ্বিক মডেল তৈরি করেছিল।
তারেক রহমান বলেন, এই সব উদ্যোগ প্রমাণ করেছে-যখন রাষ্ট্র মেয়েদের মর্যাদা রক্ষা ও ভবিষ্যতে বিনিয়োগ করে, তখন পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী হয়।
বিএনপির ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনায় নারীর ক্ষমতায়নকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে:
১. ফ্যামিলি কার্ড: পরিবারভিত্তিক সহায়তা নারীদের নামে প্রদান, যাতে সহায়তা সরাসরি পরিবারপ্রধান নারীর হাতে পৌঁছায়।
২. নারী উদ্যোক্তাদের জন্য এসএমই ঋণ ও সহায়তা: ব্যবসায় প্রশিক্ষণ, ঋণ এবং অন্যান্য আর্থিক সহায়তা প্রদান।
৩. শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি: গ্রামীণ ও শহুরে মেয়েদের জন্য একাডেমিক ও কারিগরি শিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণ।
৪. নীতিনির্ধারণে নারীর অংশগ্রহণ: নীতি ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের টেবিলে নারীদের উপস্থিতি ও অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করা।
৫. মেয়েদের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা: চলাফেরা, মতপ্রকাশ এবং ইন্টারনেট ব্যবহারে নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করা।
৬. পারিবারিক ও সামাজিক কল্যাণ: স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান ও গ্রামীণ উন্নয়নে নারীর অগ্রাধিকার প্রদান।
তারেক রহমান বলেন, আমরা শুধু কথায় নয়, বিশ্বাসে এবং ঐতিহ্যে কথা বলি। প্রতিটি মেয়ের স্বপ্নপূরণের পথে রাষ্ট্রকে তার সঙ্গী করব, প্রতিবন্ধক নয়।
এভাবে, বিএনপি নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষা ও উন্নয়নের জন্য দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করে, একটি শক্তিশালী, স্বাধীন এবং সমতাভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ার পথে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে চায়।