কিশোরগঞ্জে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন মোড় এনেছেন অ্যাডভোকেট ফয়জুল করিম মুবিন। বিএনপি থেকে পদত্যাগ করে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। তার এই সিদ্ধান্ত সামাজিক মাধ্যমে আলোচনা এবং কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে। সম্প্রতি একটি ফেসবুক লাইভে তিনি দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং শেখ হাসিনার দেশে প্রত্যাবর্তন নিয়ে মন্তব্যও করেছেন।
ফয়জুল করিম মুবিনের রাজনৈতিক পরিচিতি মূলত তার পরিবার থেকে। তার পিতা প্রয়াত ডা. আবু আহমদ ফজলুল করিম ছিলেন কিশোরগঞ্জ সদর আসনের বিএনপি সংসদ সদস্য এবং প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সরকারের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী।
ফয়জুল করিম মুবিন ৫ অক্টোবর ফেসবুকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। পরবর্তীতে লাইভে এসে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার কথা জানান। এসময় তিনি মন্তব্য করেন, শেখ হাসিনা ফিরবেই।
বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, ৫ অগাস্টের পর (আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর) জনগণ যে পরিবর্তন চেয়েছিল, তা হয়নি। এই পরিস্থিতি বিবেচনা করে তিনি আওয়ামী লীগে যোগদানের সিদ্ধান্ত নেন। তিনি আরও বলেন, যারা ক্ষমতা, পদ ও সম্পদের লোভে পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা করছে, তাদের তুলনায় শেখ হাসিনা দেশের জন্য অনেক ভালো। তাই আমি তার পাশে দাঁড়ালাম।
ফয়জুল করিম মুবিন যোগ করেন, তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী এবং ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি দৃঢ়। তিনি বলেন, “আমি কোনো পদ চাই না। যে ভালোবাসা আওয়ামী লীগের কর্মী ও সমর্থকরা আমাকে দিয়েছেন, সেটি নিয়েই আমি বাকি জীবন আওয়ামী লীগে সক্রিয় থেকে কাটাব।
পদত্যাগের আগে ফয়জুল করিম মুবিন ছিলেন কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির উপ-দপ্তর সম্পাদক এবং জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক। আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার পর তিনি তার ফেসবুক প্রোফাইলও পরিবর্তন করেছেন; প্রোফাইল ছবিতে আওয়ামী লীগের লোগো এবং কাভার ছবিতে শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার ছবি ব্যবহার করেছেন।
ফয়জুল করিম মুবিনের এই পদক্ষেপে জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা বিস্মিত। কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, তার বাবা পার্টির গুরুত্বপূর্ণ নেতা ছিলেন। তাই তাকে সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। হঠাৎ করে এমন পদক্ষেপ কেন হলো, তা আমাদের বোঝা দুঃসাধ্য। হয়তো মানসিকভাবে কিছু অসুবিধা রয়েছে, নাহলে এমন কাজ করা উচিত নয়।