পাকিস্তানি অভিনেত্রী ও মডেল হুমাইরা আসগরের মৃত্যুকে ঘিরে রহস্য আরও ঘনীভূত হচ্ছে। ইতোমধ্যে করাচি পুলিশ তাদের তদন্তের পরিসর বিস্তৃত করেছে।গত ৮ জুলাই করাচির ডিফেন্স এলাকার একটি ফ্ল্যাট থেকে হুমাইরার গলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তার মৃত্যু ঘিরে শোকের ছায়া নেমে আসে বিনোদন অঙ্গনে, পাশাপাশি শুরু হয় নানা জল্পনা ও বিচারের দাবি।
ফ্ল্যাট মালিকের বক্তব্য,ফ্ল্যাটটির মালিক মিরওয়াইজ খান জানান, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে প্রতি মাসে ৪০,০০০ টাকা ভাড়ায় হুমাইরা ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেন। ২০১৯ সালের পর থেকে ভাড়া চুক্তি নবায়ন করেননি এবং বাড়তি ভাড়াতেও সম্মত হননি। সর্বশেষ ২০২৪ সালের মে মাসের ভাড়া পরিশোধ করেছিলেন তিনি।
মালিক আরও জানান, বহুবার নোটিশ ও আইনি পদক্ষেপ নেওয়া সত্ত্বেও হুমাইরা ফ্ল্যাট ছাড়েননি। এমনকি ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে আদালতের আদেশ তার বিপক্ষে গেলেও তা মানেননি। পরে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ফ্ল্যাটে ঢুকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
নীরবতা ও অজানা সংকেত,দেশটির ফ্যাশন স্টাইলিস্ট দানিশ মাকসুদ জানান, ২০২৪ সালের ২ অক্টোবর হুমাইরার সঙ্গে একটি ফটোশুটে কাজ করেছিলেন। এরপর থেকে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও তিনি একদম নিখোঁজ ছিলেন।
প্রতিবেশীদের অনেকেই কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। কেউ বলছেন নিরাপত্তার ভয়, আবার কেউ বলছেন ব্যক্তিগত গোপনীয়তার কারণেই তারা নীরব।
তদন্তে সন্দেহভাজন ১০ জন,করাচি পুলিশ জানিয়েছে, মৃত্যুর সঠিক কারণ এখনো নিশ্চিত নয়। ময়নাতদন্ত ও ফরেনসিক রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে। তবে হুমাইরার মোবাইল ফোন বিশ্লেষণ করে অন্তত ১০ জনকে সন্দেহভাজন হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে।
ইতোমধ্যে দুজনকে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জেরা করা হয়েছে ভবনের এক সাবেক প্রহরীকেও, যার কাছ থেকে ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব বা মাদক সংশ্লিষ্টতার তথ্য জানতে চেয়েছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার আরও কয়েকজনকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। হুমাইরার জীবনের শেষ কয়েক মাসের ঘটনা ও যোগাযোগ নিয়ে বিস্তারিত জানতেই চলছে এই প্রচেষ্টা।
হুমাইরার মৃত্যু আপাতদৃষ্টিতে একাকী ও রহস্যময় মনে হলেও তদন্তে ধীরে ধীরে ভেসে উঠছে নানা অজানা দিক।