নিউজ টাইমস ডেস্ক
প্রকাশ : Jul 24, 2025 ইং
অনলাইন সংস্করণ

কৈশোরে জিনস পরিনি, কারণ ওটা ছিল ‘খারাপ মেয়েদের’ পোশাক: আজমেরী হক বাঁধন

নিজের জীবনসংগ্রাম, পোশাক নিয়ে সামাজিক ধারণা ও নারীর স্বাধীনতা নিয়ে খোলামেলা এক বক্তব্য দিয়েছেন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। বৃহস্পতিবার সকালে ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া এক দীর্ঘ পোস্টে তিনি তুলে ধরেছেন নিজের অভিজ্ঞতা ও আত্মউন্মোচনের গল্প।

পোস্টের শুরুতেই বাঁধন লেখেন, আমি একসময় ছিলাম এক আদর্শ ছোট মেয়ে। মেধাবী, বিনয়ী, আর পরতাম একেবারে সমাজ যেভাবে চায়, সেভাবেই। মা-বাবা যা পরাতে চাইতেন, সমাজ যা ‘ভদ্র’ বলে মানত, সেটাই গায়ে দিতাম। কৈশোরে কখনো জিনস পরিনি, কারণ সমাজের চোখে ওটা ছিল ‘খারাপ মেয়েদের’ পোশাক।

তিনি জানান, জীবনের একটা সময় তিনি সমাজের চোখে নিখুঁত ‘ভালো মেয়ে’ হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেই ছাঁচে ফেলে গড়া জীবন একসময় ভেঙে পড়ে। বাঁধন লিখেছেন, আমি চাইছিলাম বিচ্ছেদ, একটি সহিংস, ট্রমাময় দাম্পত্যজীবন থেকে মুক্তি। ঠিক তখনই ২০০৬ সালে আমি অংশ নিই লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতায়। সেই মঞ্চ আমাকে নতুনভাবে চিনতে শেখায়। নারী হিসেবে নয়, মানুষ হিসেবে।

বাঁধনের ভাষ্যে, তখনো সমাজের চোখে ‘ভালো নারী’ হওয়ার চাপ অনুভব করতেন তিনি। দ্বিতীয় বিবাহবিচ্ছেদের পর নিজেকে শুধু ব্যর্থ মনে হয়নি, মনে হয়েছিল সমাজ আমাকে ‘সবচেয়ে খারাপ নারী’ বলে ছাপ মেরে দিয়েছে। সেই ছাপ আমাকে ভেঙে দেয়। আমি তো সারা জীবন কাটিয়েছি ‘ভালো’ হওয়ার জন্য। কিন্তু পরিহাস দেখুন—ঠিক সেই ব্যর্থতার মাঝেই আমি খুঁজে পেয়েছি সাহস, একজন মানুষ হয়ে বাঁচার, সমাজের বানানো চরিত্র হয়ে নয়।

আরও পড়ুনঃ javascript:nicTemp();

এই পোস্টে তিনি আরও লেখেন, কীভাবে সময়ের সঙ্গে নিজের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে এনেছেন, পোশাক নিয়ে বারবার প্রশ্নের মুখে পড়েছেন। তিনি জানান, একবার এক টিভি সাক্ষাৎকারে হাতাখোলা ব্লাউজ পরে গেলে তাকে অনুরোধ করা হয় চুল দিয়ে কাঁধ ঢেকে রাখতে। এমন পরিস্থিতি বহুবার পোহাতে হয়েছে তাকে।

বছরের পর বছর আমি অগণিত উপদেশ শুনেছি। মা হিসেবে কী পরা উচিত, ‘শালীন নারী’ হিসেবে কেমন পোশাক মানায়, রক্ষণশীল পরিবারের মেয়ে হয়ে কীভাবে চলা উচিত। কিন্তু জানেন কি? এখন আমি কিছুই গায়ে মাখি না।

পোস্টের শেষাংশে বাঁধন লেখেন, আমি স্বাধীন। কী পরব, কী বলব, কী ভাববো, কিংবা কীভাবে বাঁচবো সেটা একমাত্র আমার সিদ্ধান্ত। অন্য কারও নয়। এই সমাজের বিচার-বিশ্লেষণে মাঝে মাঝে গা জ্বলে যায়, মন খারাপ হয়। কিন্তু এটাই আমাদের নারীদের প্রতিদিনের বাস্তবতা।

এই পোস্টে বাঁধনের বক্তব্য শুধু একজন নারীর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাই নয়, বরং তা হয়ে উঠেছে সমাজের প্রচলিত মূল্যবোধ ও নারী স্বাধীনতা নিয়ে এক সাহসী উচ্চারণ।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উত্তরায় বিমান দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ, সুষ্ঠু তদন্তের দাবি তারে

1

চট্টগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় জামায়াত নেতা জি এম ইলিয়াসের মৃত্যু

2

উত্তরা সেক্টর-৪-এ শর্তসাপেক্ষে শুটিং পুনরায় শুরু হতে পারে, আ

3

কুয়েটে “আন্দোলনের পরও মিলছে না স্বস্তি, পড়ালেখা নিয়ে বড় অনিশ

4

চাঁপাইনবাবগঞ্জের সীমান্তে আবার উত্তেজনা, হামলায় ৩ বাংলাদেশি

5

ট্রাম্প ওয়াশিংটনে পৌঁছেছেন, প্রথম দিনেই সই করবেন রেকর্ডসংখ্য

6

দেড় থেকে দুই কোটি মানুষকে টিসিবির পণ্য দেওয়া সম্ভব: বাণিজ্য

7

মৃত ব্যক্তির কপালে চুমু দেওয়া যাবে কি

8

শিশুর কামড়ে কোবরা সাপের মৃত্যু

9

আমি চুয়েটের শিক্ষার্থী, তাই আবেগ ও দায়বদ্ধতাও বেশি : চুয়েটের

10

নিজের করা মন্তব্যে দুঃখ প্রকাশ সারজিস আলমের

11

মাইলস্টোন স্কুলে ২৭ জুলাই থেকে সীমিত পরিসরে ক্লাস শুরু

12

দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে প্রাণ গেল দুজনের

13

করোনাকালে বাড়লেও ক্রমেই কমছে স্টার্টআপে বিনিয়োগ, নীতি সহজ কর

14

রান নেই–উইকেট নেই, তবু ম্যাচসেরা

15

ভালোবাসা ছড়ানোই আসল শক্তিঃ আরএমের বার্তা

16

ভারতে গ্রেপ্তার বাংলাদেশি মডেল শান্তা পাল, ৮ দিনের রিমান্ডে

17

হজ ব্যবস্থাপনায় সফলতা, আগাম প্রস্তুতির নির্দেশ প্রধান উপদেষ্

18

হামাস জিম্মিদের তালিকা না দেওয়া পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি কার্যকর হ

19

চুক্তি ভেঙেছে ইরান, শক্তি প্রয়োগের হুঁশিয়ারি ইসরায়েলের

20