নিউজ টাইমস ডেস্ক
প্রকাশ : Jul 8, 2025 ইং
অনলাইন সংস্করণ

পদ্মায় ভয়াবহ ভাঙন: শরীয়তপুরে ১৯ স্থাপনা নদীগর্ভে, আতঙ্কে শত পরিবার

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার নাওডোবা মাঝিরঘাট এলাকার পদ্মা সেতু প্রকল্পের নদী রক্ষা বাঁধে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে অন্তত ছয়টি বসতবাড়ি ও ১৩টি দোকানসহ মোট ১৯টি স্থাপনা মুহূর্তেই পদ্মা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।

সোমবার (৮ জুলাই) দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে হঠাৎ করে এ ভাঙন শুরু হয়। বিকেল ৪টার পর পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নেয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষায়, চোখের সামনে একে একে হারিয়ে যেতে থাকে ঘরবাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, জীবনের সঞ্চয় ও স্মৃতি। পুরো মাঝিকান্দি-নাওডোবা এলাকা জুড়ে আতঙ্ক আর হাহাকার নেমে আসে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মাত্র কিছু সময়ের ব্যবধানে পদ্মায় বিলীন হয়ে যায় ছয়টি পরিবারে বসতবাড়ি এবং ১৩টি দোকান। এতে আলম খার কান্দি, উকিল উদ্দিন মুন্সি কান্দি এবং ওছিম উদ্দিন মুন্সি কান্দি গ্রামের অন্তত ৬০০ পরিবার এখন নদীভাঙনের সরাসরি ঝুঁকিতে রয়েছে। অনেকে রাতের আঁধারে ঘরবাড়ি, আসবাবপত্র ও মালপত্র সরিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে প্রায় ১১০ কোটি টাকা ব্যয়ে পদ্মা সেতুর পূর্ব পাশে দুই কিলোমিটার দীর্ঘ রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু গত বছর নভেম্বর, চলতি বছরের ৮ জুন এবং সর্বশেষ এই ভাঙনে বাঁধ কার্যত ধসে পড়েছে।

আরও পড়ুনঃ javascript:nicTemp();

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. জলিল সরদার অভিযোগ করে বলেন, বাঁধে আগেই ফাটল দেখা দিয়েছিল, বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। সেই অবহেলার ফলেই এখন গ্রাম হারানোর শঙ্কায় পড়েছে এলাকাবাসী।

স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “দুপুরে দেখি মাটি সরে যাচ্ছে, তারপর একে একে সব দোকানপাট, ঘরবাড়ি পদ্মায় তলিয়ে গেল। আমরা খুবই আতঙ্কে আছি। স্থায়ী বাঁধ ছাড়া রক্ষা নাই।”

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাবেরী রায় বলেন, “ভাঙন পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ। আমরা জরুরি ভিত্তিতে ক্ষতিগ্রস্তদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছি। মাইকিং করে সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে, ক্ষয়ক্ষতির তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে।”

পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী তারেক হাসান জানান, সোমবারের ধস প্রায় ২০০ মিটার দীর্ঘ ছিল। ডাম্পিংয়ের পরই ভাঙন শুরু হয়। জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলার কাজ চলছে বলে জানান তিনি।

এলাকাবাসীর দাবি, আর সময়ক্ষেপণ না করে দ্রুত একটি টেকসই ও স্থায়ী রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করতে হবে। তা না হলে পদ্মার থাবায় একদিন পুরো জাজিরা মানচিত্র থেকে মুছে যাবে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কুমিল্লায় মাদকের অভিযোগে একই পরিবারের ৩ জনকে পিটিয়ে হত্যা

1

বিএনপিকে সংস্কারবিরোধী দেখানোর চেষ্টা চলছে: মির্জা ফখরুল ইসল

2

হামাস জিম্মিদের তালিকা না দেওয়া পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি কার্যকর হ

3

সিঙ্গাপুর থেকে এলএনজি এবং ইন্দোনেশিয়া থেকে অকটেন কেনা হচ্ছে

4

এটা স্কুল নয়, শাস্তিও নয়—বললেন ভারতের প্রধান নির্বাচক

5

"ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ কাঠলিচু, সুস্থতায় প্রকৃতির ছোঁয়া"

6

অশ্লীল স্লোগানের পরিণতি ভালো হবে না: গোলাম মাওলা রনি

7

প্রধান উপদেষ্টাকে মার্চে বেইজিং সফরে নিতে আগ্রহী চীন

8

নেশার ঘোরে গিলে ফেলেছিলেন চামচ, স্বপ্ন মনে করে কেটে যায় ৫ মা

9

বাড়ির দোতলায়ও পানি, ভাই–বোনের খোঁজ পাচ্ছেন না গায়িকা পুতুল

10

আমার হাতের ওপর মেয়েটা নিস্তেজ হয়ে গেল, বিদায় নিয়ে গেল

11

ঢাকায় পাথর নিক্ষেপে ব্যবসায়ী হত্যার প্রতিবাদে উত্তাল কুষ্টিয়

12

চলচ্চিত্র অভিনেতা ডিপজলের বিরুদ্ধে এসিড নিক্ষেপ ও মারধরের মা

13

নবীগঞ্জে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে শতাধিক আহত, জারি ১৪৪ ধারা

14

“দোষ নয়, মায়ের স্বভাব!” কোয়েলকে নিয়ে রঞ্জিতের খোঁচা

15

আমাদের জীবিত কিংবদন্তি দিলারা জামান...

16

বিশ্বকে বদলে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে সোশ্যাল বিজনেস : প্রধান উপদে

17

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান স্মরণে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মাসব্যা

18

ধ্বংসস্তূপে মেয়েকে খুঁজছেন হতভাগ্য এক বাবা

19

চৌদ্দগ্রামে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা: ৫ হাজার মানুষের মুখে হাস

20