প্রিন্ট এর তারিখঃ Jul 18, 2025 ইং || প্রকাশের তারিখঃ Jun 27, 2025 ইং
ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন, নদীতে বিলীন শতাধিক ঘরবাড়ি ও জমি

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে আবারো ভয়াবহ রূপ নিয়েছে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন। তীব্র স্রোতে একের পর এক বসতবাড়ি ও ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, এক মাসের ব্যবধানে অন্তত ১৩টি গ্রামের ৩৯টি বসতবাড়ি, একটি মসজিদ, রাস্তাঘাট এবং শতাধিক একর ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ঝুঁকির মুখে রয়েছে আরও শতাধিক ঘরবাড়ি ও কয়েকশ একর আবাদি জমি।
শুক্রবার (২৭ জুন) রৌমারী উপজেলার বন্দবেড় ও চরশৌলমারী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে। নদীপাড়ের মানুষ দিশেহারা। কোথায় যাবেন, কীভাবে বাঁচবেন—এই অনিশ্চয়তা আর আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন তারা।
সোনাপুর গ্রামের ভুক্তভোগী ইউনুস আলী বলেন, “বাপ-দাদার যেটুকু জায়গা ছিল তাও নদীতে ভেঙ্গে গেছে। আমার আর কিছুই নাই। এখন পর্যন্ত কোনো সাহায্য পাইনি।” আরেক ক্ষতিগ্রস্ত তানজিম সরোয়ার বলেন, “ভাঙন শুরু হতেই ঘরবাড়ি নিয়ে নিরাপদ জায়গায় সরে এসেছি। কিন্তু দিনশেষে কোনো সহায়তা না পেয়ে অসহায় হয়ে পড়েছি।”
চরশৌলমারী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান কেএম ফজলুল হক মণ্ডল জানান, “ব্রহ্মপুত্রের ভাঙন প্রতিনিয়ত তীব্র হচ্ছে। এখনই কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে ভয়াবহ বিপর্যয় দেখা দিতে পারে।” একই আশঙ্কা জানিয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান একেএইচএম সাইদুর রহমান দুলাল বলেন, “ভাঙনের কারণে চরশৌলমারী ইউনিয়নটি মানচিত্র থেকেই হারিয়ে যেতে পারে।”
স্থানীয়দের এমন দুরবস্থার মধ্যেই কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, বরাদ্দের অভাবে ভাঙনরোধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারছে না তারা। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিবুল হাসান বলেন, “ব্রহ্মপুত্রের বামতীরে ব্যাপক হারে ভাঙন চলছে। বরাদ্দ না থাকায় কিছুই করতে পারছি না। তবে প্রকল্প প্রস্তাবনা জমা দেওয়া হয়েছে, বরাদ্দ পেলে কাজ শুরু করা হবে।”
ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও বিষয়টি নিয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। না হলে আগামী দিনে মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
© সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ এস, এম, এফ মিডিয়া গ্রুপ