ঢাকা ০২:২৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
পলাশবাড়ীর বেত কাপা ইউনিয়ন পরিষদে রোহিঙ্গা সনদ প্রদান করায় তদন্ত প্রক্রিয়া চলমান নোয়াখালী সোনাইমুড়িতে বৈদ্যুতিক মিটারের সংযোগ নিয়ে দ্বন্দ্বে এক বৃদ্ধ ছুরিকাঘাতে গুরুতর জখম হয়েছেন গাইবান্ধা জেলা পরিষদের আওতায় পলাশবাড়ী এডিপি প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ জামিনে মুক্তির পর গাইবান্ধা কারাগার গেট থেকে পৌর আ.লীগ নেতা গ্রেফতার ভিত্তিহীন অভিযোগেদলকে জড়িয়ে মানববন্ধন বিচার চাইলেন কৃষকদল নেতা  ঘাঘট নদীর পাড়ে ঘাঘট শিশু পার্ক এলাকায় ‘মানববন্ধন’ নামে একটি মুক্তমঞ্চের ভিত্তি প্রস্থর স্হাপন সুষ্ঠু নির্বাচন আদায়ে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান – বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান মাঝে বিদ্যুতের খুঁটি রেখেই চলছে ভূইয়ারহাট বাজারের ড্রেন এর কাজ। ‎গোবিন্দগঞ্জে ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুলের‎বিচারের দাবিতে সাঁওতালদের সমাবেশ গাইবান্ধায় কৃষকদল ও যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে বিক্ষোভ

গাইবান্ধা জেলা পরিষদের আওতায় পলাশবাড়ী এডিপি প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

NewsTimes24BD
  • আপডেট সময় : ০৮:০৫:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ মে ২০২৫ ১ বার পড়া হয়েছে

গাইবান্ধা জেলা পরিষদের এডিপি নামক বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি প্রকল্প বাস্তবায়নে পলাশবাড়ী উপজেলায় ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বিভিন্ন স্থানে অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠান ও ভুয়া প্রকল্পের নামে বরাদ্দ দেখিয়ে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষেরা। পক্ষান্তরে জানা গেছে, ২০২২-২৩ বিগত অর্থবছরে গাইবান্ধা জেলা পরিষদের আওতায় পলাশবাড়ী উপজেলায় প্রায় ৭৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩৫টি উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে ১৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩টি প্রকল্প বাস্তবায়ন হয় দরপত্রের মাধ্যমে, ১৮ লাখ টাকার ৬টি প্রকল্প কোটেশনের মাধ্যমে এবং ৪৫ লাখ টাকার ২৬টি প্রকল্প বাস্তবায়িত হয় প্রকল্প কমিটির মাধ্যমে।সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা গেছে, বিশেষ করে কোটেশন ও প্রকল্প কমিটির মাধ্যমে বাস্তবায়িত প্রকল্পগুলোতে অনিয়মের মাত্রা বেশি। বেশিরভাগ প্রকল্পই হয়েছে দায়সারা ভাবে। একাধিক প্রকল্প কমিটির সভাপতিরা জানিয়েছেন, তারা জানেনই না তাদের নামে কোনো প্রকল্প হয়েছে। এমনকি অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে বরাদ্দ দেখিয়েও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।প্রকল্প বাস্তবায়ন নীতিমালার ৪.১৬ ধারা অনুযায়ী, বাস্তবায়িত প্রতিটি প্রকল্প এলাকায় প্রকল্পের নাম, অর্থবছর, ব্যয় এবং অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠানের নামসহ একটি ফলক স্থাপন বাধ্যতামূলক। কিন্তু অধিকাংশ এলাকায় ফলক বা সাইনবোর্ড না থাকায় সাধারণ মানুষ বুঝতেই পারছে না কোনটি সরকারি প্রকল্প, কাদের অর্থায়নে হচ্ছে, কে বাস্তবায়ন করছে এবং প্রকল্পের প্রকৃতি কী?এ বিষয়ে ভুক্তভোগী একাধিক গ্রামবাসী জানান,সাইন বোর্ড না থাকায় “আমরা বুঝতেই পারছি না, এটা সরকারি কাজ নাকি ব্যক্তিগত।”এদিকে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রকল্প তালিকার ৩৮ নম্বর প্রকল্প “পলাশবাড়ী উপজেলার ভাতগ্রাম ইউপির পাকুরিয়া বাজার সংলগ্ন জামে মসজিদ নির্মাণ” নামের প্রকল্পটির বাস্তবে অস্তিত্বই নেই। পলাশবাড়ী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুস সালাম বলেন, “এই নামে আমাদের উপজেলায় কোনো স্থান বা মসজিদ নেই। প্রকল্প তালিকায় এমন নাম থাকার প্রশ্নই ওঠে না।”নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রকল্প সভাপতি জানান, জেলা পরিষদের প্রকল্প পেতে হলে অগ্রিম ‘পার্সেন্টেজ’ দিতে হয়। বরাদ্দ যাই হোক, প্রকল্পে লাভ থাকে—কাজ তেমন না করলেও চলে।স্থানীয় নাগরিক স্বার্থ সংরক্ষণ কমিটির আহ্বায়ক মোশফিকুর রহমান মিল্টন বলেন, “প্রকল্প বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাবে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ অতি জরুরি।জেলা পরিষদের সহকারী প্রকৌশলী হারুন অর রশিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ভাই এখন কাজ বন্ধ আছে। জেলা পরিষদে আসেন, সব কথা বলা যাবে। প্রয়োজনে জেলা প্রশাসকের কাছেও নিয়ে যাব। জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম হেদায়েতুল ইসলাম বলেন, “বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। প্রকল্পে কোনো অনিয়ম হয়ে থাকলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”সচেতন মহলের দাবি, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য এবং প্রকল্প কমিটির সভাপতিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনসহ উচ্চপর্যায়ের তদন্ত জরুরি বলে মনে করেন।

গাইবান্ধা থেকে মোঃ আবু জাফর মন্ডল

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

গাইবান্ধা জেলা পরিষদের আওতায় পলাশবাড়ী এডিপি প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

আপডেট সময় : ০৮:০৫:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ মে ২০২৫

গাইবান্ধা জেলা পরিষদের এডিপি নামক বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি প্রকল্প বাস্তবায়নে পলাশবাড়ী উপজেলায় ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বিভিন্ন স্থানে অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠান ও ভুয়া প্রকল্পের নামে বরাদ্দ দেখিয়ে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষেরা। পক্ষান্তরে জানা গেছে, ২০২২-২৩ বিগত অর্থবছরে গাইবান্ধা জেলা পরিষদের আওতায় পলাশবাড়ী উপজেলায় প্রায় ৭৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩৫টি উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে ১৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩টি প্রকল্প বাস্তবায়ন হয় দরপত্রের মাধ্যমে, ১৮ লাখ টাকার ৬টি প্রকল্প কোটেশনের মাধ্যমে এবং ৪৫ লাখ টাকার ২৬টি প্রকল্প বাস্তবায়িত হয় প্রকল্প কমিটির মাধ্যমে।সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা গেছে, বিশেষ করে কোটেশন ও প্রকল্প কমিটির মাধ্যমে বাস্তবায়িত প্রকল্পগুলোতে অনিয়মের মাত্রা বেশি। বেশিরভাগ প্রকল্পই হয়েছে দায়সারা ভাবে। একাধিক প্রকল্প কমিটির সভাপতিরা জানিয়েছেন, তারা জানেনই না তাদের নামে কোনো প্রকল্প হয়েছে। এমনকি অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে বরাদ্দ দেখিয়েও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।প্রকল্প বাস্তবায়ন নীতিমালার ৪.১৬ ধারা অনুযায়ী, বাস্তবায়িত প্রতিটি প্রকল্প এলাকায় প্রকল্পের নাম, অর্থবছর, ব্যয় এবং অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠানের নামসহ একটি ফলক স্থাপন বাধ্যতামূলক। কিন্তু অধিকাংশ এলাকায় ফলক বা সাইনবোর্ড না থাকায় সাধারণ মানুষ বুঝতেই পারছে না কোনটি সরকারি প্রকল্প, কাদের অর্থায়নে হচ্ছে, কে বাস্তবায়ন করছে এবং প্রকল্পের প্রকৃতি কী?এ বিষয়ে ভুক্তভোগী একাধিক গ্রামবাসী জানান,সাইন বোর্ড না থাকায় “আমরা বুঝতেই পারছি না, এটা সরকারি কাজ নাকি ব্যক্তিগত।”এদিকে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রকল্প তালিকার ৩৮ নম্বর প্রকল্প “পলাশবাড়ী উপজেলার ভাতগ্রাম ইউপির পাকুরিয়া বাজার সংলগ্ন জামে মসজিদ নির্মাণ” নামের প্রকল্পটির বাস্তবে অস্তিত্বই নেই। পলাশবাড়ী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুস সালাম বলেন, “এই নামে আমাদের উপজেলায় কোনো স্থান বা মসজিদ নেই। প্রকল্প তালিকায় এমন নাম থাকার প্রশ্নই ওঠে না।”নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রকল্প সভাপতি জানান, জেলা পরিষদের প্রকল্প পেতে হলে অগ্রিম ‘পার্সেন্টেজ’ দিতে হয়। বরাদ্দ যাই হোক, প্রকল্পে লাভ থাকে—কাজ তেমন না করলেও চলে।স্থানীয় নাগরিক স্বার্থ সংরক্ষণ কমিটির আহ্বায়ক মোশফিকুর রহমান মিল্টন বলেন, “প্রকল্প বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাবে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ অতি জরুরি।জেলা পরিষদের সহকারী প্রকৌশলী হারুন অর রশিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ভাই এখন কাজ বন্ধ আছে। জেলা পরিষদে আসেন, সব কথা বলা যাবে। প্রয়োজনে জেলা প্রশাসকের কাছেও নিয়ে যাব। জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম হেদায়েতুল ইসলাম বলেন, “বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। প্রকল্পে কোনো অনিয়ম হয়ে থাকলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”সচেতন মহলের দাবি, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য এবং প্রকল্প কমিটির সভাপতিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনসহ উচ্চপর্যায়ের তদন্ত জরুরি বলে মনে করেন।

গাইবান্ধা থেকে মোঃ আবু জাফর মন্ডল