নিউমার্কেটের ‘চড়ুইভাতি’ রেস্টুরেন্টে অনুন্নত খাবার, ভোক্তা নিরাপত্তায় বড় প্রশ্ন

- আপডেট সময় : ০৭:৫৪:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫ ৩ বার পড়া হয়েছে
রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকার জাহানারা সড়কের পাশে রিজেন্সি প্লাজা, ১৮ এলিফ্যান্ট রোডে অবস্থিত ‘চড়ুইভাতি’ রেস্টুরেন্টে অনুন্নত, অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিবেশনের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
গত ২৪ এপ্রিল দুপুরে মাইনুল হাসান (২৯) নামের এক গ্রাহক রেস্টুরেন্টটি থেকে পোলাও-মোরগের খাবার নেন । বাড়িতে গিয়ে খাবার খোলার পর তিনি দেখতে পান, খাবারের মধ্যে রয়েছে পূর্বে খাওয়া ঝুটা মুরগির মাংসের হাড়, যা ছিল অপরিচ্ছন্ন ও দৃষ্টিকটূ।
ভুক্তভোগী গ্রাহক সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাটির ভিডিও ধারণ করে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে সরবরাহ করেন। ভিডিও ফুটেজে স্পষ্টভাবে দেখা যায়, রান্নাঘরের পরিবেশ নোংরা, অপরিষ্কার এবং স্বাস্থ্যবিধির চরম লঙ্ঘন হচ্ছে। সরেজমিন তদন্তেও রেস্টুরেন্টের ভয়াবহ অবস্থা প্রত্যক্ষ করা হয়।
রেস্টুরেন্টের মালিক আলিম হাওলাদারের সঙ্গে কথা বললে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং ঘটনাটিকে ‘ভুলবশত’ ঘটেছে বলে দায় এড়ানোর চেষ্টা করেন। তবে প্রশ্ন উঠেছে—ভুলবশত ঘটার সুযোগ কীভাবে থাকে যখন খাবারের মান এতটা নিম্নমানের এবং রান্নাঘরের অবস্থা এতটাই নাজুক?
উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, আলিম হাওলাদারের মেয়ে সুমাইয়া নিজেকে একজন ‘বড় ডাক্তার’ হিসেবে পরিচয় দেন। এই প্রেক্ষাপটে আরও বড় প্রশ্ন উঠে এসেছে—একজন চিকিৎসকের পরিবার কীভাবে স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করে জনস্বাস্থ্যের সঙ্গে এত বড় প্রতারণা করতে পারে? চিকিৎসক পরিবারের সদস্য হয়েও কীভাবে এমন নোংরা ও অনিরাপদ খাবার ব্যবসা পরিচালিত হচ্ছে, তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে।
ঘটনার তথ্য প্রকাশে বাধা সৃষ্টি করতে ‘চড়ুইভাতি’ রেস্টুরেন্টের মালিক আলিম হাওলাদার জোরপূর্বক সাংবাদিকদের পকেটে টাকা গুঁজে দেয়ার চেষ্টা করে। এ ঘটনা সাংবাদিকদের নৈতিক দায়িত্বে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার অপচেষ্টা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তবে সাংবাদিকরা বিষয়টি তৎক্ষণাৎ প্রত্যাখ্যান করে এবং এই ঘৃণ্য ঘটনার প্রমাণ সংরক্ষণ করেন।”
ঘটনার প্রমাণ সাংবাদিকদের কাছে থাকা সত্ত্বেও, মালিকপক্ষ দায় স্বীকারে গড়িমসি করে। এ ঘটনায় স্থানীয়রা এবং ভুক্তভোগী গ্রাহকরা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে সমস্ত প্রমাণ দাখিল এবং প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে।” কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, অভিযোগটি গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নিয়ে দ্রুত তদন্ত ও আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ভোক্তাদের অভিযোগ, এ ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ড জনস্বাস্থ্যের জন্য গুরুতর হুমকি। তারা দাবি করেছেন, এই রেস্টুরেন্টের বিরুদ্ধে দ্রুত কঠোর অভিযান পরিচালনা করে প্রয়োজনে প্রতিষ্ঠানটি সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হোক।
সচেতন মহলের মতে, শুধুমাত্র জরিমানা নয়—জনস্বাস্থ্য নিয়ে এ ধরনের খেলা করা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ এবং সিটি করপোরেশনের উচিত দ্রুত তদন্ত চালিয়ে আরও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।