প্রিন্ট এর তারিখঃ Nov 22, 2025 ইং || প্রকাশের তারিখঃ Sep 20, 2025 ইং
বাতাসে ভেসে যাওয়া স্বপ্ন: সিরাজগঞ্জে ৪২ কোটি টাকার বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্প অচল

সাত বছর আগে স্বপ্ন দেখানো হয়েছিল-প্রকৃতির শক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশে শুরু হবে নবায়নযোগ্য জ্বালানির এক নতুন অধ্যায়। ৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে হাতে নেয়া হয় দেশের অন্যতম বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্প। পরিকল্পনা ছিল, বাতাসের শক্তিতে টারবাইন ঘুরে উৎপাদিত হবে বিদ্যুৎ, যা স্থানীয় জনগণের চাহিদা মেটাবে এবং জাতীয় গ্রিডেও যুক্ত হবে। কিন্তু সময় পেরিয়ে গেলেও সেই আলো জ্বলেনি। কোটি কোটি টাকা খরচ হলেও এখনো প্রকল্পটি অচল পড়ে আছে।
টারবাইন বসানো হলো, বিদ্যুৎ এলো না। প্রকল্প বাস্তবায়নের শুরুতেই ছিল নানা জটিলতা। টারবাইন বসানো ও প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ সম্পন্ন হলেও বিদ্যুৎ উৎপাদন আর শুরু হয়নি। বর্তমানে টারবাইনগুলো অনেকাংশে অকেজো হয়ে গেছে। চারপাশে গড়ে ওঠা প্রকল্প এলাকা পড়ে আছে পরিত্যক্ত অবস্থায়।
প্রকল্প এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ স্পষ্ট। তারা বলছেন, আমরা ভেবেছিলাম এখানে বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে, কর্মসংস্থান বাড়বে। কিন্তু এখন দেখছি কোটি কোটি টাকা খরচ করে কিছুই হলো না। শুধু লোহার কাঠামো দাঁড়িয়ে আছে, কোনো লাভ নেই।
আরও পড়ুনঃ
বিদ্যুৎ খাতের বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পরিকল্পনার ঘাটতি, দক্ষ জনবলের অভাব এবং অনিয়মই এ ব্যর্থতার মূল কারণ। তাদের মতে, বাংলাদেশে বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা থাকলেও সঠিক পরিকল্পনা ও জবাবদিহিতার অভাবে তা বাস্তবে রূপ পাচ্ছে না।
একজন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ মন্তব্য করেন, বিশ্বজুড়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়ছে। আমাদের দেশেও যদি শুরু থেকেই সঠিকভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হতো, তাহলে এখন অন্তত আংশিক বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হতো।”
প্রকল্পটি কেন অচল হয়ে আছে, তার স্পষ্ট জবাব নেই কারো কাছে। কোটি কোটি টাকা ব্যয়ের পরও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জবাবদিহিতা না থাকায় বিষয়টি নিয়ে জনমনে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।
বিদ্যুৎ খাতের বিশেষজ্ঞ ও সাধারণ মানুষ উভয়েই চাইছেন দ্রুত প্রকল্পটি সচল করার উদ্যোগ নেয়া হোক। পাশাপাশি সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা এবং ভবিষ্যতের জন্য কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণের দাবি জোরালো হচ্ছে।
জলিলুর রহমান জনি
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
© সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ এস, এম, এফ মিডিয়া গ্রুপ