প্রিন্ট এর তারিখঃ Jul 18, 2025 ইং || প্রকাশের তারিখঃ Jul 6, 2025 ইং
ধ্বংসস্তূপে মেয়েকে খুঁজছেন হতভাগ্য এক বাবা

টেক্সাসের গুয়াদালুপে নদীর পানি হঠাৎ বেড়ে স্যান অ্যান্টোনিও শহরে ভয়াবহ আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। শতাব্দীর মধ্যে নজিরবিহীন এই বন্যায় ইতোমধ্যে ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ১৫ জনই শিশু। নিখোঁজ রয়েছে আরও বহু শিশু।
বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ‘ক্যাম্প মিস্টিক’ নামের একটি শিশুদের গ্রীষ্মকালীন ক্যাম্প। নদীর পাড়েই বসা এই ক্যাম্পটিতে শুক্রবার ভোরে আঘাত হানে বন্যার পানির প্রবল স্রোত। ক্যাম্পটিতে তখন প্রায় ৭৫০ জন শিশু অবস্থান করছিল। বেশিরভাগকেই উদ্ধার করা গেলেও নিখোঁজ রয়েছে অন্তত ২৭ জন কন্যাশিশু।
সেই নিখোঁজদের একজন আট বছরের ফুটফুটে একটি মেয়ে—যার খোঁজে এখনো ধ্বংসস্তূপ হাতড়ে বেড়াচ্ছেন তার বাবা মাইকেল (৪০)। অস্টিনের বাসিন্দা মাইকেল মেয়ের খোঁজে শনিবার ভিজে কাদামাটির ভেতর ঘুরে বেড়ান। তিনি বলেন, “আমার মেয়ে এখানেই ছিল।” মেয়ে না পেলেও তিনি পেয়েছেন তার নাম লেখা তোয়ালে, একটি ব্রেসলেট ও একটি পারিবারিক ছবি।
বৃহস্পতিবার রাত থেকেই টানা বৃষ্টির কারণে নদীর পানি মাত্র ৪৫ মিনিটে বেড়ে যায় প্রায় ২৬ ফুট। মুহূর্তেই নদীর দুই কূল উপচে ক্যাম্প ভেসে যায়। ডাইনিং হল, কেবিন—সবকিছু পানির তোড়ে ভেসে গেছে। ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে খাবারের বোতল, চেয়ার ও শিশুপোশাক।
উদ্ধার অভিযানে হেলিকপ্টার, ড্রোন ও জলযান ব্যবহার করা হয়। একটি মেয়েকে একটি গাছের সঙ্গে আটকে থাকা অবস্থায় জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট।
পার্শ্ববর্তী কেন্ট কাউন্টিতেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্লাবিত হয়েছে বাড়িঘর, ডুবে গেছে একটি জ্বালানি স্টেশন। নিখোঁজ সন্তানদের খুঁজে হতবিহ্বল মা–বাবারা সামাজিক মাধ্যমে ছবি পোস্ট করে ঈশ্বরের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা জেরার্ড মার্টিনেজ বলেন, “এমন বন্যা শত বছরে একবারই দেখা যায়। পুরো এলাকা যেন এক বিশাল নদীতে পরিণত হয়েছে।”
এদিকে কাদার ভেতর মেয়ে খুঁজে বেড়ানো বাবা মাইকেল বলছেন, “আমি অলৌকিক কিছু ঘটার আশায় আছি।”
এই হৃদয়বিদারক ঘটনায় পুরো টেক্সাসে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। উদ্ধার অভিযান চলছে। প্রশাসন বলছে, নিখোঁজদের খোঁজে যতক্ষণ প্রয়োজন, ততক্ষণ তল্লাশি চলবে।
© সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ এস, এম, এফ মিডিয়া গ্রুপ