প্রিন্ট এর তারিখঃ Jul 18, 2025 ইং || প্রকাশের তারিখঃ Jul 3, 2025 ইং
জীবন বাঁচাতে কিডনি দিলেন স্ত্রী, সুস্থ হয়েই স্বামী গেলেন পরকীয়ায়।

নিজের কিডনি দিয়ে স্বামীর জীবন বাঁচিয়েছিলেন উম্মে সাহেদীনা টুনি। তবু ভালোবাসার এই আত্মত্যাগের প্রতিদান হিসেবে পেয়েছেন নির্যাতন, অবহেলা এবং ঘরছাড়া হওয়ার যন্ত্রণা। হৃদয়বিদারক ঘটনাটি ঘটেছে সাভারের কলমা এলাকায়।
জানা গেছে, মালয়েশিয়া প্রবাসী মোহাম্মদ তারেকের সঙ্গে ২০০৬ সালে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় কলেজপড়ুয়া তরুণী টুনির। এক বছর পর পুত্রসন্তান আজমাইন দিব্যর জন্মে পরিপূর্ণ হয় তাদের সংসার। তবে ২০০8 সালে তারেক হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে ধরা পড়ে—তার দুটি কিডনিই প্রায় অকেজো হয়ে গেছে।
নতুন মা টুনি তখন সিদ্ধান্ত নেন, স্বামীকে বাঁচাতে যা করা দরকার, তাই করবেন। পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে তাকে চিকিৎসার জন্য ভারতে নিয়ে যান। তামিলনাড়ুর সিএমসি হাসপাতালে দীর্ঘদিন চলে চিকিৎসা। চিকিৎসকরা জানান, তারেকের কিডনি প্রতিস্থাপন না করলে বাঁচা অসম্ভব।
সেই সময়েই টুনি নিজেই এগিয়ে আসেন। দেন নিজের একটি কিডনি। স্বামী ফিরে পান নতুন জীবন। এসময় টুনি ঢাকায় একটি হোম বিউটি পার্লার এবং বুটিক ব্যবসা শুরু করেন, যার আয় পুরোপুরি ব্যয় করতেন স্বামীর চিকিৎসায়। বছরে তিনবার ভারতে গিয়ে চিকিৎসার ব্যয় মেটাতে বিক্রি করেন জমানো টাকা ও গয়না।
তবে সব কিছুকে উপেক্ষা করে সুস্থতার পর বদলে যান তারেক। জড়িয়ে পড়েন পরকীয়ায় এবং অনলাইন জুয়ায়। ধীরে ধীরে স্ত্রীর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়, শুরু হয় নির্যাতন। একপর্যায়ে মারধর করে টুনিকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে পরকীয়া প্রেমিকার সঙ্গে সংসার শুরু করেন তিনি।
অত্যাচারের শিকার টুনি স্বামীর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের মামলা করেন। পুলিশ তারেককে গ্রেপ্তার করলেও বর্তমানে তিনি জামিনে রয়েছেন।
একজন স্ত্রী, মা ও জীবনদাত্রী হিসেবে টুনির আত্মত্যাগ আজ প্রশ্ন তুলেছে—মানবিকতা, কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসার মানে কোথায় দাঁড়িয়ে?
© সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ এস, এম, এফ মিডিয়া গ্রুপ