প্রিন্ট এর তারিখঃ Jul 18, 2025 ইং || প্রকাশের তারিখঃ Jun 30, 2025 ইং
গর্ভবতী স্ত্রীকে হত্যায় স্বামীর মৃত্যুদণ্ড, রায় ২৩ বছর পর

বরগুনায় গর্ভবতী স্ত্রীকে নির্মমভাবে হত্যা করার দায়ে স্বামী মো. কামাল হোসেনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাকে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।সোমবার (৩০ জুন) বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ও জেলা জজ বেগম লায়লাতুল ফেরদৌস এ রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডপ্রাপ্ত কামাল হোসেন (৪৫) বরগুনার বামনা উপজেলার উত্তর কাকচিড়া গ্রামের বাসিন্দা।
আদালত সূত্র জানায়, ১৯৯৮ সালে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার মোসলেম উদ্দিনের মেয়ে জাহানারা বেগমের সঙ্গে কামালের বিয়ে হয়। সংসার জীবনে তাদের একটি কন্যাসন্তান জন্ম নেয়। ২০০৩ সালে জাহানারা আবারও গর্ভবতী হলে, ৩০ সেপ্টেম্বর সকালে কামাল ও তার পরিবারের সদস্যরা তাকে বাবার বাড়ি থেকে ৫০ হাজার টাকা যৌতুক এনে দিতে বলেন। এ প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে কামাল জাহানারাকে পেটে লাথি মেরে ও বেধড়ক পিটিয়ে জখম করেন। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের বাবা মোসলেম উদ্দিন বলেন, ঘটনার পর জামাতা কামাল ফোন করে জানান, জাহানারা গুরুতর অসুস্থ। কিন্তু পরদিন গিয়ে তিনি দেখেন মেয়ের নিথর দেহ বাড়ির উঠানে পড়ে আছে। তার শরীরে ছিল একাধিক আঘাতের চিহ্ন। থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ ‘অপমৃত্যু’ মামলা নেয়। পরে তিনি আদালতের শরণাপন্ন হন।
২০০৩ সালের ২২ অক্টোবর তিনি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে তদন্ত শেষে ২০০৪ সালের ২৭ জানুয়ারি আসামি কামালের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রনজুয়ারা সিপু বলেন, মামলায় ৯ জনকে আসামি করা হলেও তদন্তে কেবল কামালের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়। মামলার দীর্ঘসূত্রতার জন্য রাষ্ট্রপক্ষের গাফিলতিকেই দায়ী করেছেন বিচারক। তবে দীর্ঘ ২৩ বছর পর হলেও এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন নিহতের পরিবার।
© সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ এস, এম, এফ মিডিয়া গ্রুপ